বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

কবিতা

ছবি
Facebook.com/gorabasunia এ পৃথিবীর বুকে তুমি প্রস্ফুটিত সব চেয়ে সুন্দর তম ফুল, শুধু তোমা কেই দেখার জন্যে আমার হৃদয় হয় আকুল, তোমাকে সুন্দর লাগে তাই দেখি সেকি মোর কোন ভুল ? তোমার জন্যে কেঁদে কেঁদে মরে আমার পরাণ বুলবুল। শিশিরে ভেজা পাপড়ির মত ঠোট মেঘের মত নরম চুল, ফুলের চেয়েও রূপসী যে তুমি হরিণ নয়ন তোমার অতুল । তোমার রুপের আসক্তিতে ভাসে আমার হৃদয়ের দু কূল, তুমি সব চেয়ে সুবাসিত বিনোদিনী আমার বাগিচার ফুল ।

আমাকে ভালোবাসার পর

হুমায়ুন আজাদ ভালো থেকো ভালো থেকো ফুল, মিষ্টি বকুল, ভালো থেকো। ভালো থেকো ধান, ভাটিয়ালি গান, ভালো থেকো। ভালো থেকো মেঘ, মিটিমিটি তারা। ভালো থেকো পাখি, সবুজ পাতারা। ভালো থেকো। ভালো থেকো চর, ছোট কুড়ে ঘর, ভালো থেকো। ভালো থেকো চিল, আকাশের নীল, ভালো থেকো। ভালো থেকো পাতা, নিশির শিশির। ভালো থেকো জল, নদীটির তীর। ভালো থেকো গাছ, পুকুরের মাছ, ভালো থেকো। ভালো থেকো কাক, কুহুকের ডাক, ভালো থেকো। ভালো থেকো মাঠ, রাখালের বাশিঁ। ভালো থেকো লাউ, কুমড়োর হাসি। ভালো থেকো আম, ছায়া ঢাকা গ্রাম, ভালো থেকো। ভালো থেকো ঘাস, ভোরের বাতাস, ভালো থেকো। ভালো থেকো রোদ, মাঘের কোকিল, ভালো থেকো বক, আড়িয়ল বিল, ভালো থেকো নাও, মধুমতি গাও,ভালো থেকো। ভালো থেকো মেলা, লাল ছেলেবেলা, ভালো থেকো। ভালো থেকো, ভালো থেকো, ভালো থেকো। তুমি হাতখানি রাখ প্রিয়তমা, তুমি হাতখানি রাখো আমার গুমোট বুকে। শুনতে পাচ্ছো শব্দ? কে যেনো হাতুড়ি ঠুকে চলছে? সেখানে এক মিস্ত্রি থাকে,যে বানিয়ে চলেছে এক শবাধার । কার জন্যে জানো?—– আমার, আমার । উল্লাসে বিদ্বেষে নিরন্তর সে হাতুড়ি ঠুকছে দুই হাতে, কিছুতে ঘুমোতে পারছিনা আমি, দিনে কিংবা রাতে। মিস্ত্রি, দ্রুত করো, তুমি কাজ শেষ করো তাড়াতাড়ি, যাতে আমি অবশেষে শান্তিতে ঘুম যেতে পারি । । উপহার click to collapse contents বুড়ো হয়ে গেছি বেশ,কিছুটা শিথিল; বুঝতে পারিনি তাই তোমার একুশতম জন্মদিনে,তিলোত্তমা,কী নিয়ে যাই । তুমি ঘাসফুল,স্বনলতা,রোদ,পৌষের তুষের আগুন, কোকিলের ডাক,কৃষ্ণচূড়া,রক্তজবা,নদী,রঙিন ফাগুন। গোলাপ ফোটাবো ওষ্ঠ বাড়িয়ে দাও গোলাপ ফোটাবো, বঙ্কিম গ্রীবা মেলো ঝরনা ছোটাবো। যুগল পাহাড়ে পাবো অমৃতের স্বাদ, জ্ব’লে যাবে দুই ঠোঁটে একজোড়া চাঁদ। সুন্দরীর নৌকো ঢুকাবো বঙ্গোপসাগরে, অতলে ডুববো উত্তাল আশ্বিনের ঝড়ে। শিউলির বোঁটা থেকে চুষে নেবো রস, এখনো আমার প্রিয় আঠারো বয়স। তোমার পুষ্পের কলি মধুমদগন্ধময়, সেখানে বিন্দু বিন্দু জমে আমার হৃদয়। আমি সম্ভবত খুব ছোট কিছুর জন্য আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবো ছোট ঘাসফুলের জন্যে একটি টলোমলো শিশিরবিন্দুর জন্যে আমি হয়তো মারা যাবো চৈত্রের বাতাসে উড়ে যাওয়া একটি পাঁপড়ির জন্যে একফোঁটা বৃষ্টির জন্যে আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো দোয়েলের শিসের জন্যে শিশুর গালের একটি টোলের জন্যে আমি হয়তো মারা যাবো কারো চোখের মণিতে গেঁথে থাকা একবিন্দু অশ্রুর জন্যে একফোঁটা রৌদ্রের জন্যে আমি সম্ভবতখুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো এক কণা জ্যোৎস্নার জন্যে এক টুকরো মেঘের জন্যে আমি হয়তো মারা যাবো টাওয়ারের একুশ তলায় হারিয়ে যাওয়া একটি প্রজাপতির জন্যে এক ফোঁটা সবুজের জন্যে আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্যে মারা যাবো খুব ছোট একটি স্বপ্নের জন্যে খুব ছোট দুঃখের জন্যে আমি হয়তো মারা যাবো কারো ঘুমের ভেতরে একটি ছোটো দীর্ঘশ্বাসের জন্যে একফোঁটা সৌন্দর্যের জন্যে। আমাকে ভালোবাসার পর আমাকে ভালবাসার পর আর কিছুই আগের মত থাকবে না তোমার, যেমন হিরোশিমার পর আর কিছুই আগের মতো নেই উত্তর থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত। যে কলিংবেল বাজে নি তাকেই মুর্হুমুহু শুনবে বজ্রের মত বেজে উঠতে এবং থরথর ক’রে উঠবে দরোজাজানালা আর তোমার হৃৎপিন্ড। পরমুহূর্তেই তোমার ঝনঝন-ক’রে ওঠা এলোমেলো রক্ত ঠান্ডা হ’য়ে যাবে যেমন একাত্তরে দরোজায় বুটের অদ্ভুদ শব্দে নিথর স্তব্ধ হ’য়ে যেত ঢাকা শহরের জনগণ। আমাকে ভালবাসার পর আর কিছুই আগের মত থাকবে না তোমার। রাস্তায় নেমেই দেখবে বিপরীত দিক থেকে আসা প্রতিটি রিকশায় ছুটে আসছি আমি আর তোমাকে পেরিয়ে চ’লে যাচ্ছি এদিকে-সেদিকে। তখন তোমার রক্ত আর কালো চশমায় এত অন্ধকার যেনো তুমি ওই চোখে কোন কিছুই দ্যাখো নি। আমাকে ভালবাসার পর তুমি ভুলে যাবে বাস্তব আর অবাস্তব, বস্তু আর স্বপ্নের পার্থক্য। সিঁড়ি ভেবে পা রাখবে স্বপ্নের চূড়োতে, ঘাস ভেবে দু-পা ছড়িয়ে বসবে অবাস্তবে, লাল টুকটুকে ফুল ভেবে খোঁপায় গুঁজবে গুচ্ছ গুচ্ছ স্বপ্ন। না-খোলা শাওয়ারের নিচে বারোই ডিসেম্বর থেকে তুমি অনন্তকাল দাঁড়িয়ে থাকবে এই ভেবে যে তোমার চুলে ত্বকে ওষ্ঠে গ্রীবায় অজস্র ধারায় ঝরছে বোদলেয়ারের আশ্চর্য মেঘদল। তোমার যে ঠোঁটে চুমো খেয়েছিলো উদ্যমপরায়ণ এক প্রাক্তন প্রেমিক, আমাকে ভালবাসার পর সেই নষ্ট ঠোঁট খঁসে প’ড়ে সেখানে ফুটবে এক অনিন্দ্য গোলাপ। আমাকে ভালবাসার পর আর কিছুই আগের মত থাকবে না তোমার। নিজেকে দুরারোগ্য ব্যাধিগ্রস্ত মনে হবে যেনো তুমি শতাব্দীর পর শতাব্দী শুয়ে আছো হাসপাতালে। পরমুহূর্তেই মনে হবে মানুষের ইতিহাসে একমাত্র তুমিই সুস্থ, অন্যরা ভীষণ অসুস্থ। শহর আর সভ্যতার ময়লা স্রোত ভেঙে তুমি যখন চৌরাস্তায় এসে ধরবে আমার হাত, তখন তোমার মনে হবে এ-শহর আর বিংশ শতাব্দীর জীবন ও সভ্যতার নোংরা পানিতে একটি নীলিমা-ছোঁয়া মৃণালের শীর্ষে তুমি ফুটে আছো এক নিষ্পাপ বিশুদ্ধ পদ্ম- পবিত্র অজর।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ভালবাসার কবিতা

নষ্ট হবে

এত হাসি কোথায় পেলে